আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার গাজা শহরের কাছে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) এই হামলা হয়েছে। হামলার আগে ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণ গাজায় সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। ওই অঞ্চলের রাফাহ শহরে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে স্থল ও আকাশপথে হামলা চালাচ্ছে সেনারা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।

গাজা শহরের শেজাইয়ার আশেপাশের বাসিন্দারা বলেছেন, বিকেলের দিকে ট্যাংক চলাচলের আওয়াজ এবং গুলির শব্দে বিস্মিত হয়েছিলেন তারা। শহরটিতে সারারাত বোমাবর্ষণের পর ড্রোন হামলাও চালিয়েছে সেনারা। যুদ্ধের প্রথম দিকে এই অঞ্চলে এ ধরনের হামলা হয়েছিল।

গাজা শহরের এক বাসিন্দা ২৫ বছর বয়সী মোহাম্মদ জামাল। একটি চ্যাট অ্যাপের মাধ্যমে রয়টার্সকে তিনি বলেছেন, ‘শব্দ শোনে মনে হচ্ছিল আবারও যেন যুদ্ধ শুরু হচ্ছে। একটি সিরিজ বোমা হামলায় ভবনগুলো কেঁপে উঠেছিল। আমাদের এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে।’

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফিলিস্তিনি সিভিল ইমার্জেন্সি সার্ভিস জানিয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক হামলায় শেজাইয়াতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৭ জন নিহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকা পড়েছেন আরও অনেকে। ফলে আরও হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

রয়টার্সের পাওয়া ফুটেজে অভিযান শুরুর পর নারী, পুরুষ এবং শিশুদের ব্যাগ ও খাবার নিয়ে রাস্তায় দৌঁড়াতে দেখা গেছে। পালানোর সময় কিছু পুরুষ আহত শিশুদের কোলে করে সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছিলেন।

রক্তাক্ত একটি ছেলে শিশুকে কোলে করে নিয়ে যাওয়া এক ব্যক্তি বলেছিলেন, ‘ইসরায়েলি দখলদারিত্ব আমাদের লক্ষ্যবস্তু করছে। আপনি তো দেখতেই পাচ্ছেন। আপনি দেখছেন এখানে শিশুদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।’

ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র বলেছেন, শেজাইয়ায় হতাহতের খবর নিয়ে তাদের কোনও মন্তব্য নেই।

এদিকে, হামাসের মিত্র ইসলামিক জিহাদের সশস্ত্র শাখা জানিয়েছে, তারা গাজার পূর্বে একটি ইসরায়েলি ট্যাংকে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।

সশস্ত্র যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে বেসামরিকদের মধ্যে লুকিয়ে থাকার অভিযোগ এনেছে ইসরায়েল। এসময় তাদের বিরুদ্ধে অভিযানের পথ থেকে বাস্তুচ্যুত মানুষদের সরে যেতে সতর্ক করেছে।

শেজাইয়ার বাসিন্দা ও বাস্তুচ্যুতদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে করা একটি পোস্ট সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আভিচায় আদ্রাই বলেছেন, ‘নিরাপত্তার জন্য আপনাদের অবিলম্বে সালাহ আল-দিন স্ট্রিটের দক্ষিণে মানবিক অঞ্চলে সরে যেতে হবে।’

তবে বাসিন্দারা ও হামাস মিডিয়া বলেছে, ওই পোস্টের আগেই ট্যাংকগুলো শহরটিতে চলে গেছে। ইসরায়েল দক্ষিণে রাস্তা অবরোধ করে রাখায় শহরের পূর্ব দিকে গোলাগুলির মধ্যেই বাসিন্দা ও বাস্তুচ্যুতরা পশ্চিম দিকে ছুটছেন।